রাজধানীর সরকারি সাত কলেজ নিয়ে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি গঠনের ফলে কলেজের সক্ষমতা সংকোচনের দেখা দিয়েছে উল্লেখ করে এগুলোকে কলেজিয়েট বা অধিভুক্তমূলক কাঠামোর আওতায় রাখার প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে শিক্ষক সংখ্যা বাড়ানো, গবেষণা বাজেট, আধুনিক ল্যাব, লাইব্রেরি, আবাসন ও বৃত্তি সুবিধা সম্প্রসারণের মাধ্যমে মানসম্মত উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করাসহ ৫ প্রস্তাবনা দিয়েছেন সরকারি সাত কলেজ শিক্ষকরা।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে গিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর এসব দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি দেন সরকারি সাত কলেজ শিক্ষকদের পক্ষে ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষকরা।
উচ্চশিক্ষা সংকোচন ও নারীর উচ্চশিক্ষায় বৈষম্যমূলক প্রভাব প্রতিরোধে প্রস্তাবনাগুলো হলো- শিক্ষক সংখ্যা বাড়ানো, গবেষণা বাজেট, আধুনিক ল্যাব, লাইব্রেরি, আবাসন ও বৃত্তি সুবিধা সম্প্রসারণের মাধ্যমে মানসম্মত উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করা। সব অংশীজনের জানার অধিকার ও তথ্যের স্বচ্ছতা বজায় রেখে সিদ্ধান্ত নেয়া। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের স্বার্থ সুরক্ষা করে শিক্ষা-পরিবেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখা। রংপুর কারমাইকেল কলেজ ও বরিশাল বি এম কলেজের উদাহরণ অনুসরণ করে, প্রয়োজনে নতুন ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তাবনা দেন তারা।
স্মারকলিপিতে শিক্ষকরা জানান, কলেজগেুলোতে আসন কমানোর ফলে, দেশের বিশাল সংখ্যক সুবিধাবঞ্চিত ছাত্র-ছাত্রী উচ্চশিক্ষা হতে বঞ্চিত হবে। সরকারি কলেজের গঠনগত বৈশিষ্ট্য ও অবকাঠামো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় কাঠামোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এতে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে দুই ধরনের সংকট তৈরি হয়।
একদিকে শিক্ষার সুযোগ সংকুচিত হয়, অন্যদিকে অবকাঠামোগত সংকট চরমে উঠে। এসব কলেজের শিক্ষকরা বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা। আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় হলে স্বাভাবিকভাবেই তাদের পদ সেখানে সংকুচিত হয়ে যাবে।
পদ বিলুপ্ত হলে তা ভবিষ্যত বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার পদপ্রার্থীদের বিশাল সুযোগ থেকে বঞ্চিত করবে। ইডেন মহিলা কলেজ ও বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ দীর্ঘকাল ধরে নারী শিক্ষার অগ্রযাত্রায় অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালন করে আসছে। প্রস্তাবিত সংকোচন কার্যকর হলে রাজধানীতে নারীদের উচ্চশিক্ষা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে, তাদের প্রবেশাধিকার সংকীর্ণ হবে এবং সংবিধানপ্রদত্ত সমান সুযোগের নিশ্চয়তা লঙ্ঘিত হবে।
এছাড়াও তারা জানান, শিক্ষার্থীদের একটি অংশ প্রস্তাবিত কাঠামোর প্রতি অনাগ্রহ প্রকাশ করে আন্দোলনে নেমেছে। ইডেন ও তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা সম্প্রতি সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচির মাধ্যমে তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। ভবিষ্যতে পূর্ণাঙ্গ পরামর্শ ও অংশীজনের মতামত বিবেচনা না করলে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অবিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক অস্থিরতা ও আন্দোলনের ঝুঁকি তৈরি হবে।