.
ঢাকা | বঙ্গাব্দ

সরকারি ৭ কলেজ নিয়ে নতুন জটিলতা

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : Sep 25, 2025 ইং
সরকারি ৭ কলেজ নিয়ে নতুন জটিলতা ছবির ক্যাপশন: সংগৃহীত
ad728

রাজধানীর সাত সরকারি কলেজের সমন্বয়ে প্রস্তাবিত ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাকেবি) কাঠামো নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান নিয়েছেন। এরই মধ্যে গতকাল বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় করতে অধ্যাদেশের খসড়া প্রকাশ করেছে।



ঢাকার সাতটি সরকারি কলেজকে একীভূত করে প্রস্তাবিত কাঠামোয় নতুন বিশ্ববিদ্যালয় করার উদ্যোগে আপত্তি জানিয়ে গতকাল একযোগে নিজ নিজ কলেজে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষকেরা। আবার শিক্ষকদের এই দাবিকে ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যায়িত করে দ্রুত অধ্যাদেশ জারি না হলে কঠোর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

তবে শিক্ষকেরা বলছেন, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে না। তারা মনে করেন, প্রস্তাবিত কাঠামোয় বিশ্ববিদ্যালয় হলে কলেজগুলোর উচ্চশিক্ষা ও নারী শিক্ষার সংকোচন এবং কলেজের স্বতন্ত্র কাঠামো ও ঐতিহ্য বিলুপ্ত হবে। এমনকি বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের পদও বিলুপ্তির ঝুঁকিতে পড়বে।



সরকারি এই সাত কলেজ হলো ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ, বাঙলা কলেজ ও তিতুমীর কলেজ। বর্তমানে এই সাত কলেজে দেড় লাখের বেশি শিক্ষার্থী রয়েছেন। আর শিক্ষক রয়েছেন হাজারের বেশি।

এসব কলেজের মধ্যে বর্তমানে ইডেন ও তিতুমীরে শুধু স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পড়ানো হয়। বাকি পাঁচটি কলেজে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের পাশাপাশি উচ্চমাধ্যমিকও পড়ানো হয়।

এসব কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রস্তাবিত কাঠামোয় বিশ্ববিদ্যালয় হলে উচ্চমাধ্যমিক স্তর অস্তিত্বসংকটে পড়বে। ঢাকা কলেজের উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীরা গতকাল কলেজের সামনে বিক্ষোভ করেছেন। তাঁদের আশঙ্কা, প্রস্তাবিত কাঠামোতে বিশ্ববিদ্যালয় হলে উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষা কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হবে।


অন্যদিকে দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে আগে থেকে আন্দোলন করে আসছেন কলেজগুলোর স্নাতক-স্নাতকোত্তর পর্যায়ের অনেক শিক্ষার্থী।

জানতে চাইলে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশের খসড়া তৈরি করে দেওয়ার জন্য গঠিত কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান বলেন, তাদের দায়িত্ব ছিল স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অধ্যাদেশের খসড়া তৈরি করে দেওয়া। তারা কাজটি করে দিয়েছেন। এখন পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, অধ্যাদেশের খসড়া নিয়ে সাত কর্মদিবসের মধ্যে মতামত দেওয়া যাবে। এরপর অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

অবশ্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, এখনকার মতো কাঠামো অনুযায়ী কলেজগুলো আগামী কয়েক বছর চলবে।



২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে যথেষ্ট প্রস্তুতি ছাড়াই সাত কলেজকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়েছিল। তখন থেকেই সংকট ছিল। চলতি বছরের জানুয়ারিতে সাত কলেজকে আবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদা করার ঘোষণা দেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু নতুন বিশ্ববিদ্যালয় চূড়ান্ত করার আগেই অধিভুক্তি বাতিল করায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। এখন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষকে প্রশাসক করে অন্তর্বর্তী ব্যবস্থায় সাত কলেজের কার্যক্রম চলছে।

যেভাবে চলবে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়

খসড়া অধ্যাদেশ অনুযায়ী, চারটি ভাগে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চলবে। এর মধ্যে স্কুল অব সায়েন্সের আওতায় ঢাকা কলেজে ফলিত গণিত, প্রাণিবিদ্যা, ডেটা সায়েন্স, প্রাণরসায়ন ও জৈবপ্রযুক্তি; ইডেন কলেজে পদার্থবিদ্যা, ফলিত রসায়ন, উদ্ভিদবিদ্যা, ফরেনসিক সায়েন্স এবং বদরুন্নেসা কলেজে মনোবিজ্ঞান এবং পরিবেশ ব্যবস্থাপনা বিষয় চালু করা যাবে।

স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড হিউম্যানিটিসের আওতায় বাঙলা কলেজে যেসব বিষয় চালু করা যাবে, তার মধ্যে রয়েছে সাংবাদিকতা ও যোগাযোগ অধ্যয়ন, উন্নয়ন অধ্যয়ন, অর্থনীতি, চলচ্চিত্র অধ্যয়ন এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতি।

স্কুল অব বিজনেসের আওতায় তিতুমীর কলেজে থাকবে হিসাববিজ্ঞান, মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা, হোটেল অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস, ব্যাংক অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স ম্যানেজমেন্ট এবং স্কুল অব ল অ্যান্ড জাস্টিসের আওতায় কবি নজরুল কলেজে আইন এবং সোহরাওয়ার্দী কলেজে অপরাধবিজ্ঞান বিষয় চালু করা যাবে।

বিশ্ববিদ্যালয় ‘হাইব্রিড’পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে। ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ ক্লাস হবে অনলাইনে, বাকিগুলো সশরীর। পরীক্ষা হবে সশরীর।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছিুক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, শিক্ষকদের মধ্যে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হওয়ার মতো যোগ্য হবেন, তারা থাকতে পারবেন। যদিও শিক্ষকেরা আশঙ্কা করে বলেছেন, প্রস্তাবিত কাঠামোয় বিশ্ববিদ্যালয় হলে জগন্নাথ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় করার সময় যে অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছিল, এখনো তা হবে।


নিউজটি পোস্ট করেছেন : স্টাফ রিপোর্টার

কমেন্ট বক্স
এক সপ্তাহের মধ্যে ভর্তি পরীক্ষার সময় নির্ধারণ করতে পারে মেডি

এক সপ্তাহের মধ্যে ভর্তি পরীক্ষার সময় নির্ধারণ করতে পারে মেডি