.
ঢাকা | বঙ্গাব্দ

শিক্ষা কোটায় কলেজে ভর্তিতে নজিরবিহীন জালিয়াতি

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : Sep 22, 2025 ইং
শিক্ষা কোটায় কলেজে ভর্তিতে নজিরবিহীন জালিয়াতি ছবির ক্যাপশন: সংগৃহীত
ad728

চলতি ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণির ভর্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য বরাদ্দকৃত ২ শতাংশ কোটায় নজিরবিহীন জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। যাদের জন্য কোটা, তাদের বাইরেও শত শত সাধারণ শিক্ষার্থী এ কোটায় আবেদন করে পছন্দের কলেজে ভর্তি হয়েছে। ইতোমধ্যে একাদশ শ্রেণির ক্লাসও শুরু করেছে।


এ পরিস্থিতিতে রোববার ভর্তি কার্যক্রমে শিক্ষা কোটার প্রযোজ্যতা স্থগিত করেছে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। এতে বলা হয়, হাইকোর্টের দেওয়া স্থগিতাদেশ মেনে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

স্কুল-কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও এর আওতাধীন দপ্তর-সংস্থার সন্তানদের জন্য ২ শতাংশ কোটা রয়েছে। সারাদেশে কলেজগুলোতে এখনও একাদশ শ্রেণির ভর্তি চলছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ মিলিয়ে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা সাড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ জনের বেশি নয়। তাদের মধ্যে এবার এসএসসি পাস করেছেন সর্বোচ্চ ১০০ জনের সন্তান। অথচ এই কোটায় এবার ভর্তির সুযোগ পেয়েছে ২ হাজার ৭৭ জন। প্রশ্ন উঠেছে, বাকি এক হাজার ৯শর বেশি সন্তান কোথা থেকে এলো?



জানা গেছে, ব্যবসায়ী, বেসরকারি চাকরিজীবী ও বিমা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীর সন্তানরাও ভুয়া প্রত্যয়নপত্র দিয়ে আবেদন করেছে এবং কিছু ক্ষেত্রে কলেজ শিক্ষকদের যোগসাজশে ভর্তি হয়েছে।


ভর্তির নীতিমালা অনুযায়ী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১ শতাংশ কোটা (শিক্ষা কোটা-১) এবং মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তর বা সংস্থা এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অধীন সরকারি স্কুল-কলেজ ও কার্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য আরও ১ শতাংশ কোটা (শিক্ষা কোটা-২) রাখা হয়েছে।

এ ছাড়া মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কোটার ভর্তি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। চলতি বছর এ কোটায় নির্বাচিত হয়েছেন এক হাজার ৫০৬ জন শিক্ষার্থী। ভর্তি কমিটির সদস্যদের মতে, বাস্তবে এত শিক্ষার্থী থাকার কথা নয়।

ভর্তি কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক রিজাউল হক বলেন, কোটার অনিয়মের কারণে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী পছন্দের কলেজে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে না। এর স্থায়ী সমাধান শিক্ষা মন্ত্রণালয়কেই নিতে হবে।

গতকাল ঢাকা বোর্ডের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি গত ১০ আগস্ট ইকিউ-২ কোটা-সংক্রান্ত ভর্তি নির্দেশিকা জারি করেছিল। নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন সরকারি স্কুল, সরকারি কলেজ, সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং সরকারি শিক্ষা অফিসসমূহে কর্মরত শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর সন্তানদের জন্য এ কোটা প্রযোজ্য হবে। তবে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ওই নির্দেশনা আপাতত কার্যকর হবে না।

অবশ্য এই আদেশের ব্যাখ্যায় ঢাকা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক রিজাউল হক বলেন, শিক্ষা-১ ও শিক্ষা-২ কোটায় ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করা হয়নি। এ দুই কোটায় যারা ভর্তি হয়েছে, তাদের ভর্তি বহাল আছে। শুধু সরকারি স্কুল ও সরকারি কলেজের কর্মরতদের সন্তানদের ক্ষেত্রে তা আদালতের নির্দেশে স্থগিত করা হয়েছে।

জানা যায়, শিক্ষা কোটা-২ নির্ধারণ করা হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন ২৮টি দপ্তর, অধিদপ্তর ও সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানের জন্য। এ কোটায় ব্যবসায়ী, বেসরকারি চাকরিজীবীদের সন্তানরাও আবেদন করে। তারা ভুয়া সনদপত্র দেখিয়ে কলেজে ভর্তিও হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

সাধারণ অভিভাবকদের বক্তব্য হলো, অনেক শিক্ষার্থী ভুয়া প্রত্যয়নপত্র বানিয়ে এনে কলেজে জমা দিচ্ছে। কলেজের শিক্ষকদের সঙ্গে যোগসাজশে তারা ভর্তিও হয়ে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের অর্থ লেনদেন হচ্ছে। শিক্ষা কোটায় ভর্তির সুযোগ পেয়েছে তিন হাজার ৩৭১ জন। তাদের মধ্যে শিক্ষা কোটা-১-এ সুযোগ পেয়েছে দুই হাজার ৭৭ জন এবং শিক্ষা কোটা-২-এ এক হাজার ২৯৪ জন।


নিউজটি পোস্ট করেছেন : স্টাফ রিপোর্টার

কমেন্ট বক্স
‘আমি ভয়ও পাচ্ছি, কারণ ইসরায়েলিদের বিশ্বাস করি না’

‘আমি ভয়ও পাচ্ছি, কারণ ইসরায়েলিদের বিশ্বাস করি না’